বিশ্বকবি রবিন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা পত্র, বঙ্গবাসীদের জন্য।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

-বিশ্বকবির খোলা পত্র
~~~~~~~~~~~~
প্রিয় বঙ্গবাসীগন,
গতকল্য হইতে একটি সংবাদ শুনিয়া অতীব
মর্মাহত হইয়াছি।কিয়ৎ বৎসর পূর্বে
আমার প্রাপ্ত নোবেল পদক
শান্তিনিকেতন হইতে চুরি
হইয়াছিল,সিআইডি আর সিবিআই নামক
দুই সংস্থা অনেক ঘাম ঝরাইয়া
লাফাইয়া কুদাইয়া উক্ত কেস সমাধান
না করিতে পারিয়া রণে ভঙ্গ দিয়াছেন
,ইহা অবধি সব ঠিকই ছিল ,ইহা ছাড়াও
আমার সহিত সেক্সপীয়ার আর কিটস
মহাশয়য়ের সাক্ষাৎএবং গান গাইয়া
মহাত্মাজীর অনশন ভঙ্গের সংবাদ শ্রবণ
করিয়া আমি হতচকিৎ হইয়াছিলাম।আমি
তো শুনায়াছি আমার দাড়ি আছে আর
মধূর দাড়ি আছে বলিয়া আমার ছবি লইয়া
মধূর জন্মজয়ন্তী পালন করা হইয়াছে।
কিন্তু গতকল্য সবকিছুর ঊর্ধ্বে একি ঘটনা
আমায় ব্যথিত করিয়াছে। ফেসবুক নামক
সামাজিক ক্ষেত্রে একটি পোস্টে
কলিকাতার বিশ্ব বঙ্গ সরণীর ওপর
দণ্ডায়মান ল্যাম্প পোস্টের গাত্রে
বিজ্ঞাপিত ওনার ছবি সহ একটি
পোস্টারের দিকে দৃষ্টি আকর্ষিত হইয়া
আমি জ্ঞান হারাইয়াছিলাম।
পোস্টারটিতে ওনার ছবির নিম্নে দুটি
পংতি বর্ণিত ছিল।
গীতাঞ্জলীর স্রষ্টা
ছবি
লহ প্রনাম
আমি তো শুনিয়াছিলাম কথাঞ্জলি
নামক এক গ্রন্থের স্রষ্টা উক্ত সর্বগুন
সম্পন্না মহীয়সী নারী বঙ্গের
সিংহাসনে আলো করিয়া বসিয়াছেন ।
আমি এও শুনিয়াছিলাম উক্ত গ্রন্থ হইতে
একটি বা দুটি কবিতা শুনাইলে যাহারা
ডাকাতি, চুরি মতো দুষ্কর্ম করিয়া
থাকেন,ঠগীর মতো জীবনযাপন করিয়া
থাকেন সব দুষ্কর্ম ছাড়িয়া রাজ্য হইতে
পলায়নের ইচ্ছা প্রকাশ করিতে লাগে ।
আমি তো নিশ্চিত ছিলাম যে বঙ্গদেশ
হইতে আর এক নোবেল পুরস্কার হিসাবে
যদিও বা না আসিতে পারে তবে একটি
কৎবেল অবশ্যই পাইত ওই কথাঞ্জলী
গ্রন্থের সুবাদে। আমি তো বুঝিলাম না
আমার লিখত গীতাঞ্জলী গ্রন্থের উপর
উহার এতো আক্রোশ কেন !!
উফ!!সেই একই নারী
আবার করিয়াছে বাড়াবাড়ি
হে সাংবাদিক ,তব মুখে একি কথা শুনি ,
এই নারীই তো আমার ছবি দিয়া
মাইকেলের জন্মদিন পালন করিয়েছে
জানি।
এই কিছু দিন পূর্বে বলিয়াছিল
আমার সাথে সেক্সপিয়ার আর কিটস
দেখা করিয়াছিল,
ইহারও পূর্বে শুইয়াছিলাম তার অমৃত বচন
আমি না কি গান গাইয়া
ভাঙিয়াছিলাম গান্ধীজীর অনশন
হে প্রভু এই ছিল তোমার মনে
কেন উহাকে প্রেরণ করিয়াছিলে এই
ভুবনে
পরিশেষে আমার লিখিত একটি কবিতা
দিয়া পত্রের সমাপ্তি ঘটাইব
কিছু অশিক্ষিত বাঙালিরে হে বঙ্গ
জননী, রেখেছ তৃণমূলী করে মানুষ করনি'
ভবদীয়
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর


Post a Comment

0 Comments